প্রথাগত এবং প্রথা ভাঙার ভাষা:
কোনটা প্রথা, কোনটাইবা প্রথার ভাঙন ? 'অপরূপ ভাবে ভাঙা, গড়ার চেয়েও মূল্যবান কখনো কখনো...' । হ্যাঁ,ভাঙতে জানা চাই...। তেমন করে ভাঙা বাংলা সাহিত্যে কজনই বা ভেঙেছেন। যারা ভেঙেছেন, তারা থেকে গেছেন, বাকি সবই তো ঝাঁটার প্রলেপ...। আবহমানের প্রচলিত ছন্দ ভেঙে দুর্ধর্ষ উঠে দাঁড়ালেন মাইকেল, সেই যে দাঁড়ানো, দেখলে এখনো মাথা নত হয়ে আসেনা ? তারপর ধরুন বঙ্কিম । না, এখনো বাংলা সাহিত্যে তার সঠিক উত্তরাধিকারী অপ্রতুল । দু'একজন সতীনাথ, বিভূতিভূষণ কে বাদ দিলে আর কেউ নেই বললেই চলে।
যদি থাকত, যদি বঙ্কিমের কাব্যঝংকারময় উত্তরাধিকার সঠিক পথে পরিচালিত হত, তাহলে বাংলাসাহিত্য মানে শুধু ভুতুড়ে-সাহিত্য বোঝাতো না নিশ্চয়। মাঝে মধ্যে দু'একজন কমল কুমার,সুভাষ ঘোষাল...বিস্মরণ-সমৃদ্ধ, এছাড়া কোথায় সেই ভাষার ঝংকার । কেউ আবার ভেবে বসবেন না যেন, যে বঙ্কিমের স্টাইলের সাথে আমি সতীনাথ বিভূতিভূষণের তুলনা টানলাম। তুলনাটা ভাষা ও কাব্য-চেতনার।
যদি থাকত, যদি বঙ্কিমের কাব্যঝংকারময় উত্তরাধিকার সঠিক পথে পরিচালিত হত, তাহলে বাংলাসাহিত্য মানে শুধু ভুতুড়ে-সাহিত্য বোঝাতো না নিশ্চয়। মাঝে মধ্যে দু'একজন কমল কুমার,সুভাষ ঘোষাল...বিস্মরণ-সমৃদ্ধ, এছাড়া কোথায় সেই ভাষার ঝংকার । কেউ আবার ভেবে বসবেন না যেন, যে বঙ্কিমের স্টাইলের সাথে আমি সতীনাথ বিভূতিভূষণের তুলনা টানলাম। তুলনাটা ভাষা ও কাব্য-চেতনার।
কোথায় বাংলাভাষায়
রচিত অখণ্ড ভারতভূমির বিস্তার, কোথায় সেই ব্যাপক ইতিহাস চেতনার ছবি, কোথায় বা আন্তর্জাতিকতা...এখন বহুল-খ্যাত ও প্রধান বাংলা সাহিত্য গুলিতে ভূমি মানে -- কলকাতা, মাঝে মধ্যে মুখ বদলে শান্তিনিকেতন!
আর ইতিহাস চেতনা মানে, বামফ্রন্ট আর কংগ্রেসের ইতিহাস, আন্তর্জাতিকতা
মানে বেনাপোল বর্ডার...। তবু আমাদের আত্ম শ্লাঘার শেষ নেই। অথচ বাংলা সাহিত্যের আধুনিকতার বিস্তারের আরম্ভেই আমরা পেয়েছি মাইকেল, বঙ্কিমদের। তারপর যিনি রয়েছেন, সম্ভবত বাঙালীর অন্বেষণ বিমুখতার প্রধান কারণ তিনিই, হাজার বছরের বোঝা তিনি একাই বহন করছেন, সুতরাং আমাদের অপ্রয়োজনের মস্তিষ্ক শূন্য—তিনি রবীন্দ্রনাথ।
এরা প্রত্যেকেই কিন্তু চলিত' প্রথাকে ভেঙেছেন নিজস্ব নিয়মেই, নিজস্ব প্রয়োজনেই। প্রয়োজনেই , কারণ চলিত' প্রথার সংকীর্ণ প্রসারের ভিতর এরা নিজেদের স্থাপন করতে ছিলেন অপারগ, প্রত্যেকেই দমবন্ধ অপ্রশস্ত গলিপথ থেকে নিজস্ব রাজপথ খুঁজে নিয়েছেন আপন গরজেই, সেটাই দস্তুর...পরে,কালে কালে, ইতিহাসের বিষম ঠাট্টার মতো যে পথের উপরে গজিয়ে উঠবে অশ্লীল বাজার, অবৈধ নির্মাণ সেই পথকে করবে অবরুদ্ধ, পথ ক্রমশ তমসাবৃত হাভিয়া-দোজখের দিকে চলে যাবে...তারপর তো আমাদেরও জন্ম হবে —সে অনেক পরের কথা।
তার আগে আছেন গলিত ধ্বস্ত সময়-কাল-পথের এক মায়াময় পথিক—জীবনানন্দ। কে যেন বলে ছিলেন; ভাষার ওপর 'তাণ্ডবনৃত্য' ভাষাকে ভেঙে দেয় ,তছনছ করে। তারপর যারা আসে নাচ দেখানোর বাসনায়, তারা সে ভাঙা মঞ্চের ওপরে বড় অসহায় বোধ করে। লক্ষণীয়, রবীন্দ্র পরবর্তী,জীবনানন্দ পরবর্তী কবিদের সে অবস্থাই হয়েছে;--- এই ভাঙা ভাষা, ধ্বস্ত ভাষা লইয়া আমরা কী করিব!
সম্ভবত এই পথেই প্রথমে চোরাগোপ্তা এবং পরে প্রকাশ্য প্রবেশ উত্তরাধুনিকতার। যার জন্মভূমি পাশ্চাত্য দেশ।
এরা প্রত্যেকেই কিন্তু চলিত' প্রথাকে ভেঙেছেন নিজস্ব নিয়মেই, নিজস্ব প্রয়োজনেই। প্রয়োজনেই , কারণ চলিত' প্রথার সংকীর্ণ প্রসারের ভিতর এরা নিজেদের স্থাপন করতে ছিলেন অপারগ, প্রত্যেকেই দমবন্ধ অপ্রশস্ত গলিপথ থেকে নিজস্ব রাজপথ খুঁজে নিয়েছেন আপন গরজেই, সেটাই দস্তুর...পরে,কালে কালে, ইতিহাসের বিষম ঠাট্টার মতো যে পথের উপরে গজিয়ে উঠবে অশ্লীল বাজার, অবৈধ নির্মাণ সেই পথকে করবে অবরুদ্ধ, পথ ক্রমশ তমসাবৃত হাভিয়া-দোজখের দিকে চলে যাবে...তারপর তো আমাদেরও জন্ম হবে —সে অনেক পরের কথা।
তার আগে আছেন গলিত ধ্বস্ত সময়-কাল-পথের এক মায়াময় পথিক—জীবনানন্দ। কে যেন বলে ছিলেন; ভাষার ওপর 'তাণ্ডবনৃত্য' ভাষাকে ভেঙে দেয় ,তছনছ করে। তারপর যারা আসে নাচ দেখানোর বাসনায়, তারা সে ভাঙা মঞ্চের ওপরে বড় অসহায় বোধ করে। লক্ষণীয়, রবীন্দ্র পরবর্তী,জীবনানন্দ পরবর্তী কবিদের সে অবস্থাই হয়েছে;--- এই ভাঙা ভাষা, ধ্বস্ত ভাষা লইয়া আমরা কী করিব!
সম্ভবত এই পথেই প্রথমে চোরাগোপ্তা এবং পরে প্রকাশ্য প্রবেশ উত্তরাধুনিকতার। যার জন্মভূমি পাশ্চাত্য দেশ।
সেই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে একটা প্রশ্ন অবধারিত উঠে আসবে : তাহলে সাহিত্য মানে কি শুধুই ভাষাকে ভাঙার ইতিহাস ? এবং তৎপরবর্তী নব্যভাষা গঠনের কারুকাজ মাত্র ?—না , তা তো কখনোই নয় । এগুলো আবহমান পথ মাত্র, গন্তব্য অন্যত্র । গন্তব্যে পৌঁছনর উদ্দেশ্যেই পথের নির্মাণ । এবং প্রতিটি মানবের যেহেতু একটা নিজস্ব গন্তব্য রয়েছে, আপন মঞ্জিল, তাই তার পথও আলাদা হওয়াই স্বাভাবিক। দুটি মানুষের দুটি পথ পাশাপাশি চললেও কখনোই একটিই পথ দুজনের নয়, কারণ ব্যক্তি আলাদা । তাদের ভাবনা ও গতি ভিন্ন, তাই পথও ভিন্ন । তাহলে ইউরোপে ও পাশ্চাত্য দেশে জন্ম নেওয়া পথ, আমাদের পথ কি ভাবে হয়ে উঠলো? এ এক পরম বিস্ময় !
ইউরোপীয় সমাজ রাষ্ট্র যে পথে এগিয়েছিল, অষ্টাদশ শতাব্দীতে,...শিল্প-বিপ্লব, মহাযুদ্ধ যে ভাবে বদলে দিয়েছিল সেখানকার সমাজ ও ব্যক্তিজীবন, তার আন্দাজ তখন আমরা পাইনি। ইউরোপের প্রবল গৃহযুদ্ধ, মন্দা, মহাযুদ্ধ ও মূল্যবোধের ধ্বংসসাধন আমাদের প্রত্যক্ষ করতে হয়নি।
অনেক পরে 'ইতিহাসের' পৃষ্ঠায় আমরা দেখলাম ভ্যানগঘের 'আলু-ভোজী', গুন্টার গ্রাসের টিনড্রামের চলচ্চিত্র রূপান্তর দেখছিলাম একদিন, সে এক বিধ্বস্ত মানবতার দলিল, সেখানেও দেখলাম আলু-ভোজী,অর্থাৎ দারিদ্রের অনন্যপায়োতা...আর মানব জীবনের অবমূল্যায়নের ভুরিভুরি উদাহরণ জার্মানিতে,পোল্যান্ডে,রাশিয়ায়,তার পরে পরে অনেক জায়গায়...। ভেঙ্গে গেলো ইউরোপীয় সমাজের রক্ষণশীলতা। ক্রুসেডের শেষ ভাগে যুদ্ধের প্রয়োজনে পুরুষ-শূন্য পরিবার গুলিতে নারীরাই এগিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল সামাজিক কর্মকাণ্ডে । মহাযুদ্ধের প্রভাবে সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটল পুনর্বার...
এইভাবে ভেতরে ভেতরে মার খেতে খেতে তৈরি হয়েছে একটা সমাজ। উঠে এসেছে একের পর এক সাংস্কৃতিক,সামাজিক আন্দোলন,তার প্রভাব পড়েছে সাহিত্যে শিল্পে...।আমরা দুর থেকে শুধু দেখেছি,বাহাবা দিয়েছি, নিজেদের ইতিহাস, ভূমি, দুর্গতি, মন্বন্তর, মৃত্যু-মিছিল, দেশভাগ ভুলেছি আর বিজাতীয় আন্দোলন নকল করেছি...(আশ্চর্য! 'বাঙালী কেড়ে খায়নি কেন' সেও তো আজ গবেষণার বিষয়!...হয়ত এই কারণেই কোনো নিজস্ব সাংস্কৃতিক আন্দোলনও(?) নেই আমাদের)
যথারীতি বাংলা সাহিত্যের মধ্যে ঢুকে পড়ল মার্ক্স ও ফ্রয়েডীয় তত্ত্ব, যা আজো আমাদের আরোপিত মনে হয়না! (মানিক থেকে মহা-চীন, কোথায় বা মার্ক্স সাহেব সঠিক ভাবে প্রযুক্ত হলেন) বুদ্ধদেব বসু, যিনি জীবৎকালে ছিলেন কিংবদন্তী,প্রয়াণের কয়েক দশকের মধ্যেই বিস্মৃত প্রায়, কেন,কে বলে দেবে? সত্তরের দশক বাংলা জগৎকে অনেক দিয়েছে, তবে সে যত-না সাহিত্যের প্রয়োজনে, তারচেয়ে ঢের বেশী সমাজ বদলের দায়ে। সেই বদলের অভিঘাতও ইতিহাস,যার কোনো পূর্ণ প্রামাণ্য সাহিত্য দলিল আজো নেই,যেটুকু পাই তাও আলংকারিক মাত্র।
অনেক পরে 'ইতিহাসের' পৃষ্ঠায় আমরা দেখলাম ভ্যানগঘের 'আলু-ভোজী', গুন্টার গ্রাসের টিনড্রামের চলচ্চিত্র রূপান্তর দেখছিলাম একদিন, সে এক বিধ্বস্ত মানবতার দলিল, সেখানেও দেখলাম আলু-ভোজী,অর্থাৎ দারিদ্রের অনন্যপায়োতা...আর মানব জীবনের অবমূল্যায়নের ভুরিভুরি উদাহরণ জার্মানিতে,পোল্যান্ডে,রাশিয়ায়,তার পরে পরে অনেক জায়গায়...। ভেঙ্গে গেলো ইউরোপীয় সমাজের রক্ষণশীলতা। ক্রুসেডের শেষ ভাগে যুদ্ধের প্রয়োজনে পুরুষ-শূন্য পরিবার গুলিতে নারীরাই এগিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল সামাজিক কর্মকাণ্ডে । মহাযুদ্ধের প্রভাবে সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটল পুনর্বার...
এইভাবে ভেতরে ভেতরে মার খেতে খেতে তৈরি হয়েছে একটা সমাজ। উঠে এসেছে একের পর এক সাংস্কৃতিক,সামাজিক আন্দোলন,তার প্রভাব পড়েছে সাহিত্যে শিল্পে...।আমরা দুর থেকে শুধু দেখেছি,বাহাবা দিয়েছি, নিজেদের ইতিহাস, ভূমি, দুর্গতি, মন্বন্তর, মৃত্যু-মিছিল, দেশভাগ ভুলেছি আর বিজাতীয় আন্দোলন নকল করেছি...(আশ্চর্য! 'বাঙালী কেড়ে খায়নি কেন' সেও তো আজ গবেষণার বিষয়!...হয়ত এই কারণেই কোনো নিজস্ব সাংস্কৃতিক আন্দোলনও(?) নেই আমাদের)
যথারীতি বাংলা সাহিত্যের মধ্যে ঢুকে পড়ল মার্ক্স ও ফ্রয়েডীয় তত্ত্ব, যা আজো আমাদের আরোপিত মনে হয়না! (মানিক থেকে মহা-চীন, কোথায় বা মার্ক্স সাহেব সঠিক ভাবে প্রযুক্ত হলেন) বুদ্ধদেব বসু, যিনি জীবৎকালে ছিলেন কিংবদন্তী,প্রয়াণের কয়েক দশকের মধ্যেই বিস্মৃত প্রায়, কেন,কে বলে দেবে? সত্তরের দশক বাংলা জগৎকে অনেক দিয়েছে, তবে সে যত-না সাহিত্যের প্রয়োজনে, তারচেয়ে ঢের বেশী সমাজ বদলের দায়ে। সেই বদলের অভিঘাতও ইতিহাস,যার কোনো পূর্ণ প্রামাণ্য সাহিত্য দলিল আজো নেই,যেটুকু পাই তাও আলংকারিক মাত্র।
তবে নির্লজ্জতার
চরম ও উল্লসিত প্রকাশ সুপ্রসিদ্ধ 'বঙ্গীয় নব্বইয়ের দশক'। যেখানে প্রকাশ্যে ঘোষিত হল.'কবিতা'কে হতে হবে স্মার্ট,শহুরে এবং গ্রাম্যতা বর্জিত।
'গ্রাম্য' শব্দটি বহুতলীয়, তাই ওটিকে সযত্নে এড়িয়ে গেলাম। কিন্তু স্মার্ট! শহুরে !!
অর্থাৎ চমকদার, জেল্লাদার, যৌন-গর্ভ, অগভীরতার এক সার্বিক উদযাপন!! ছন্দময় যৌনতা জীবনের অঙ্গ, কিন্তু ছল-চাতুরী পূর্ণ যৌনতা, জীবন ও ছন্দ-হীন যৌনতার এক চাপা উল্লাসে পূর্ণ অনেক কবিতা রচিত হল, (আর যা হল—এক অগ্রজ, প্রখ্যাত ও প্রধান কবির বাহ্যিক ও অক্ষম অনুকরণে ভরে গেল নব্বইয়ের দশক) ।
'গ্রাম্য' শব্দটি বহুতলীয়, তাই ওটিকে সযত্নে এড়িয়ে গেলাম। কিন্তু স্মার্ট! শহুরে !!
অর্থাৎ চমকদার, জেল্লাদার, যৌন-গর্ভ, অগভীরতার এক সার্বিক উদযাপন!! ছন্দময় যৌনতা জীবনের অঙ্গ, কিন্তু ছল-চাতুরী পূর্ণ যৌনতা, জীবন ও ছন্দ-হীন যৌনতার এক চাপা উল্লাসে পূর্ণ অনেক কবিতা রচিত হল, (আর যা হল—এক অগ্রজ, প্রখ্যাত ও প্রধান কবির বাহ্যিক ও অক্ষম অনুকরণে ভরে গেল নব্বইয়ের দশক) ।
পশ্চিমবঙ্গীয়
বাংলা কবিতা মানে হয়ে দাঁড়াল একটিই ভাষা ভঙ্গী, এক জনের কবিতার ভাষা অন্য জনের থেকে আলাদা করা যায় না। কবিগন কারখানার প্রোডাকশনে পরিণত হলেন। সকলই বাংলা কবিতা প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক প্রযোজিত ও প্রচারিত । গ্রাম বাংলা ও মফস্বলের কবিদেরও উৎসাহিত করা হল ‘স্মার্ট, শহুরে’ কবিতার প্রতি। সবই শূন্য-গর্ভ । গমন-উদ্দেশ্যহীন এক অন্ধ-যাত্রা, যেখানে বিপথগুলি এসে পড়েছে একে অন্যের ঘাড়ে। উদ্দেশ্য চেনা যায় না ! নাকি সাহিত্য ও কাব্যের বাইরে রয়েছে অন্য কোনো কাঞ্চন উদ্দেশ্য ?
একদিকে আমেরিকা-ইউরোপের বাণিজ্যিক-সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনকে ধিক্কার,অপর দিকে তাদেরি প্রযোজিত একরৈখিক, বৈচিত্র্য ধ্বংসকারী বাণিজ্যিক সংস্কৃতির উত্তরাধিকারকে লালিত করে চললাম। 'স্মার্ট'' হওয়ার জন্য,'শহুরে' হওয়ার জন্য এবং সর্বোপরি চটজলদি খ্যাতিলাভের
জন্য,এইবার, আবার ভাষাকে ভাঙার 'প্রয়োজন' দেখা দিল। বলা বাহুল্য এই প্রয়োজন আরোপিত মাত্র। এই অবৈধতার প্রয়োজনেই আমরা ভাষা-রাজপথ ছেড়ে,সংকীর্ণ অন্ধ-গলির আশ্রয় নিলাম খানিকটা সচেতনেই।ভাষার 'দ্যুতি'' 'মায়া' গ্রামীণ লোকজ শব্দ ব্রাত্য গণ্য হল।
কয়েকজন ব্যতিক্রমী ছাড়া নব্বইয়ের অধিকাংশই ঐ কানাগলির পথিক।আজ মাত্র এক দশকের ব্যবধানে তরা প্রত্যেকেই অন্তর্হিত। অন্তর্হিত,কারণ তাদের নিজস্ব কোনো ভাষা ছিলনা,তাদের বলার মতো কোনো বেদনা ছিলনা। ধার করা ভাষা ও কল্প-বেদনা কবিতার উপজীব্য হতে পারেনা কখনো।
অর্থাৎ ইউরোপীয় সভ্যতার যে বেদনা, আমাদের কাছে তাই ধার করা ছদ্ম-অশ্রু। যা শীতের ধুসর বিকেলে নিস্তরঙ্গ পুকুরের ভাসমান সরের মতো ম্লান। যার কোনো সুদূর গভীরতা নেই। সত্যিকারের আধুনিক আমরা কবে হব... ।
কয়েকজন ব্যতিক্রমী ছাড়া নব্বইয়ের অধিকাংশই ঐ কানাগলির পথিক।আজ মাত্র এক দশকের ব্যবধানে তরা প্রত্যেকেই অন্তর্হিত। অন্তর্হিত,কারণ তাদের নিজস্ব কোনো ভাষা ছিলনা,তাদের বলার মতো কোনো বেদনা ছিলনা। ধার করা ভাষা ও কল্প-বেদনা কবিতার উপজীব্য হতে পারেনা কখনো।
অর্থাৎ ইউরোপীয় সভ্যতার যে বেদনা, আমাদের কাছে তাই ধার করা ছদ্ম-অশ্রু। যা শীতের ধুসর বিকেলে নিস্তরঙ্গ পুকুরের ভাসমান সরের মতো ম্লান। যার কোনো সুদূর গভীরতা নেই। সত্যিকারের আধুনিক আমরা কবে হব... ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন